Print Sermon

এই ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য হল ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি এবং ধর্ম্মোপদেশের ভিডিওগুলি বিশ্বব্যাপী পালক ও মিশনারিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বে, যেখানে ধর্ম্মতত্ত্বমূলক সেমিনারী বা বাইবেল স্কুল থাকলেও খুব কম রয়েছে|

এই সমস্ত ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি ও ভিডিওগুলি www.sermonsfortheworld.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এখন প্রতি বছর 221টি দেশের প্রায় 1,500,000 কম্প্যুটারে যায়| আরও শত শত লোক ইউটিউবের ভিডিওর মাধ্যমে এগুলি দেখেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তারা ইউটিউব ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং আমাদের ওয়েবসাইটে চলে আসেন| ইউটিউব আমাদের ওয়েবসাইটে লোক এনে দেয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি প্রতি মাসে 46টি ভাষায় প্রায় 120,000 কম্প্যুটারে প্রচারিত হয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি গ্রন্থসত্ত্ব দ্বারা সংরক্ষিত নয়, কাজেই প্রচারকগণ আমাদের অনুমতি ছাড়াই এইগুলি ব্যবহার করতে পারেন| মুসলিম এবং হিন্দু রাষ্ট্রসমেত, সমগ্র পৃথিবীতে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার এই মহান কাজে সাহায্য করার জন্য কিভাবে আপনি একটি মাসিক অনুদান প্রদান করতে পারেন তা জানতে অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন|

যখনই আপনি ডঃ হেইমার্‌সকে লিখবেন সর্বদা তাকে জানাবেন যে আপনি কোন দেশে বাস করেন, অথবা তিনি আপনাকে উত্তর দিতে পারবেন না| ডঃ হেইমার্‌সের ই-মেল ঠিকানা হল rlhymersjr@sbcglobal.net |




অবশিষ্টাংশদের সেই তত্ত্ব

লেখকঃ ডাঃ আর.এল.হাইমার্স,জুনি.
THE DOCTRINE OF THE REMNANT
(Bengali)

by Dr. R. L. Hymers, Jr.

২৭-শে জানুয়ারী, ২০১৩ সালে সদাপ্রভুর দিনে এক সান্ধ্যকালীন মুহুর্তে লস এঞ্জেলেসের
ব্যাপটিস্ট ট্যাবারনাকেলে এক সংবাদ প্রচারিত হয়েছিল
A sermon preached at the Baptist Tabernacle of Los Angeles
Lord’s Day Evening, January 27, 2013

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)


এই সংবাদের যে শিরোনাম তা আমি ডাঃ ডাব্লুউ. এ. ক্রিসওয়েল (১৯০৯-২০০২) অংশটিকে অনুকরণ করেছি; যিনি ছিলেন ডালাস, টেক্সাসের ব্যাপটিস্ট প্রথম মন্ডলীর দীর্ঘকালীন পালক। আমি সেই কথাই বলতে চাই যে কিছু প্রচারক সম্ভবত সেই কথাই বলবে। ‘তত্ত্ব বা মতবাদের কথাটাকে ব্যবহার করবেন না’। কেননা লোকেরা ‘তত্ত্ব বা মতবাদের’ কথা শুনলে ফিরে যাবে। সেই সমস্ত প্রচারকের কাছে মতবাদ ও ধর্মতত্ত্ব ততোটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তারা মতবাদের থেকে বরং মানুষের প্রয়োজনের বিষয়য়েই সংবাদ বা উপদেশ দান করে থাকেন। তাই আমরা ব্যাক্তিত্ববাদের বিষয়ে বা প্রেত তত্ত্ববাদের উপরে অথবা অদৃষ্টবাদের তত্ত্ব বা ধর্মতত্ত্ব মূলক তত্ত্বের বিষয়ে আমাদের কাছে সেই প্রকার ভালো কোন সংবাদ বা উপদেশ নেই। আজকের দিনে আমাদের কাছে যে সমস্ত সংবাদ বা উপদেশ রয়েছে তা প্রসঙ্গত ঈশ্বর কেন্দ্রিক হওয়া থেকে বরনহ মনুষ্য কেন্দ্রিক। আর তাই আমি ডাঃ ক্রিস ওয়েলের শিরোনামকে ব্যাবহার করছি যার নাম হল ‘অবশিষ্টাংশদের সেই তত্ত্ব’। মহান সেই প্রচারক মতবাদের বিষয়ে প্রচার করা থেকে পিছ’পা হন নি! কিন্তু বর্তমান দিনে প্রচারকেরা শাস্ত্রের মধ্যে ধর্মতত্ত্বমূলক সত্যতা এবং তত্ত্বের পরিবর্তে তারা মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করতে শুরু করেছে। এখানে আধুনিক সময়ের বেশ কিছু উপদেশ রয়েছে যা প্রচারের সময়ে ‘মানুষ কেন্দ্রিক’ বলেই মনে হয় তার উল্লেখ করা হয়েছে। আর এই গুলি হল তার প্রকৃত শিরোনামঃ ‘আপনার জীবনের দায়িত্বশীলতা’, ‘প্রেমে চলা’, ‘দীর্ঘকালীন নিরাপত্তা হীনতা’, ‘মমতার সঙ্গে জীবন যাপন করা’, ‘বসবাস ও জীবন যাপন শুরু করা’, ‘নিজেকে ভালো করা’, ‘এখনই নিজের জীবনে উত্তমতায় বসবাস কর’, ‘নিজের পরিচিতি আবিষ্কার করা’, ‘নিজের মেজাজকে সামলে নেওয়া’। আর এখানেই সেই ইহা রয়েছে যা সমস্ত কিছুকে বলে, ‘ভালো বিবাহের প্রতি আপনার পন্থায় হাসতে থাকুন’। আমি এই কথা বলছি না যে এই সংবাদে সাহায্য কারী কিছু নেই, সম্ভবত সেখানে হয়তো তা আছে। আমি যে কথা বলতে চাইছি, যে আজকের দিনে বেশির ভাগ উপদেশ বাইবেলের ধর্মতত্ত্ব এবং বাইবেলের তত্ত্বকেন্দ্রিকতা হওয়ার থেকে উপরের যে শিরোনাম তা মানু্ষের প্রয়োজন কতটা সেটাকেই তুলে ধরেছে। আর তাই সেই প্রকার সংবাদ শুনে আমি জানি ও উপলব্ধি করতে পারছি যে ইহা কতোটাই না ক্লান্তিকর ও একঘেয়েমি মনে হয় আর ইহা প্রকৃত তাই। সেগুলো শুনলে মনে হয় ওপরা উইনফ্রে বা রিডার্স ডাইজেস্টের ন্যায়!

ডাঃ ডেভিড এফ. ওয়েলসের লেখা বেশ কিছু বই আমি পড়ছিলাম। তিনি হলেন গর্ডন কনওয়েল থিওলজিক্যাল সেমিনারীর অধ্যাপক। হ্যাঁ, তিনি হলেন সবথেকে নতুন ইভাঞ্জেলিক্যাল (সুসমাচার প্রচার মুখী) কিন্তু তিনি চিত্তাকর্ষক বেশ কিছু বিষয় বলেন। দৃষ্টান্ত স্বরুপ তিনি, ‘শূন্য এবং ছেলেমনা কাহিনী বলেন যা বেশ কিছু সুসমাচার প্রচারকারী মন্ডলী সমূহ থেকে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ব্যাপি বেশ কিছু সংবাদ পরিবেশন করে এসেছে ..। যেখানে আমরা ধর্মতত্ত্বের কাছে নিজেদের শূন্য করে দিয়েছি, যেখানে আমরা প্রচারের ক্ষেত্রে খ্রীষ্টিয় জীবনের গাম্ভীর্যকে শূন্য করে ফেলেছি’। (David F. Wells, Ph.D., No Place for Truth: Or Whatever Happened to Evangelical Theology?, Eerdmans, 1993, p. 292). এই প্রকার একটার প্রতি আমি এইভাবে সম্মতি প্রকাশ করছি।

ডাঃ ডাব্লুউ.এ. ক্রিসওয়েল ছিলেন তত্ত্বমূলক প্রচারকারী। তার আকর্ষনীয় প্রায় সংখ্যক উপদেশের মধ্যে ছিল সুদৃঢ ব্যাখামূলক ভিত্তি এবং ধর্মতত্ত্ব। আর এই ডাঃ ক্রিসওয়েল যখন “অবশিষ্টাংশকারী তত্ত্ব” বিষয়ে প্রচার করেন, তখন আমি বিস্মিত হই না। কিন্তু ইহা সেই প্রকার দূর্বল ও শুকনো বা মৃতপ্রায় কোন সংবাদ চিল না। যে কেউ ডাঃ ক্রিসের কোন সময়ে শুনেছেন তারা স্মরণ করতে পারেন যে তিনি ছিলেন, এক জ্বলন্ত প্রচারক। ক্রিসওয়েল সম্পূর্ন ভাবেই ডাঃ মার্টিন লয়েড-জোনসের সঙ্গে একমত কেননা ডাঃ লয়েড-জোনস বলেছেন,

“প্রচার কি? আগুনের উপরে যুক্তিপ্রদান...! ইহা হল ধর্মতত্ত্বের উপরে অগ্নি বর্ষণ...। প্রচার হল ধর্মতত্ত্ব যা এমন একজন ব্যাক্তির দ্বারা উপস্থিত হয় যিনি অগ্নিদায়ী...। একজন ব্যাক্তি যিনি এই সমস্ত বিষয় নিয়ে কথা বলেন আবেগ যুক্ত ভাবেই প্রচার বেদীতে থাকার তার কোন অধিকার নেই; আর তাকে যেন এই ভাবে কোন একতাতে প্রবেশ করার অনুমোদন প্রদান করা না হয়। (D. Martyn Lloyd-Jones, M.D., Preaching and Preachers, Zondervan Publishing House, 1972, p. 97).

আর তাই আমি ডাঃ ক্রিস ওয়েলের শিরোনামকেই রাখতে চাই যা হল ‘অবশিষ্টাংশদের সেই তত্ত্ব’। আর আমি প্রার্থনা করি আপনাদের মনযোগ আকর্ষণ করার প্রতি ঈশ্বর আমাকে সাহায্য করবেন যেন যথেষ্ঠ ‘অগ্নি’ সেখানে প্রবেশ করাই এবং সম্ভবত আজকের রাত্রে বেশ কিছু আত্মার প্রতি সেই কথোপকথন পরিচালিত করতে পারি।

আমাদের পাঠাংশ বলে,‘পুণঃপ্রবেশকারীদের তত্ত্ব’,

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)

‘বাহিনীগণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন...’। হিব্রু ভাষায় ‘পুণঃপ্রবেশকারী’ শব্দকে অনুবাদ করা হয়েছে ‘প্রবাদবচন’ হিসাবে। ইহার অর্থ হল, ‘কোন ভাবে বেঁচে থাকা’। প্রাচীনকালের র‍্যাব্বাইয়েরা হিব্রু ভাষা থেকে ইহাকে গ্রীকে তাদের সেপ্টুয়াজিন্টে অনুবাদ করেন যেখানে তারা গ্রীক শব্দ ব্যাবহার করেন ‘স্পারমা’, যার অর্থ হল, ‘স্পার্ম’ বা ‘বীজ’। বাহিনীগণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন, সামান্যতম বীজ, কেবলমাত্র বিশ্বস্ত দলের সামান্য অনুগামীদের না রাখতেন, তাহলে আমরা সম্পূর্ণ ভাবেই ধ্বংস হয়ে যেতাম ঈশ্বরের ক্রোধে, ঠিক সেই সদোম ও ঘোমরা নগরীর মতো। পুণঃপ্রবেশকারী বা বেঁচে থাকার ‘তত্ত্ব’ তাহলে কি? ইহা হল ঈশ্বর তাঁর নিজের জন্য ছোটদলের ন্যায় এক বিশ্বস্ত লোকেদের তাঁর জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন যেন তাঁর সংগে স্বর্গে সাক্ষাৎ করার জন্য বিচার বা দণ্ড প্রদান কারী অগ্নির হাত থেকে তাদের নিরাপদে নিয়ে আনবেন। আর সেটাই হল পুণঃপ্রবেশ কারী তত্ত্ব। সেটাই হল আমাদের পাঠ্যাংশের সংবাদ।

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)

ঈশা ঈশ্বরের দণ্ড প্রদানকারী সংবাদের কথা প্রচার করেন। কিন্তু সেই সঙ্গে প্রত্যাশার সংবাদও প্রচার করেন। ঈশার বইয়েতে তিনি বলেন যে, এই পৃথিবী বিচারিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে, তথাপি, জগতের প্রতি কি হবে তাতে কোন যায় আসে না, ঈশ্বর তাঁর বিশ্বস্ত প্রবেশকারীদের সংরক্ষণ করে রাখবেন। এক বীজ, বাঁচিয়ে রাখার একটি ছোট দল। আর বাঁচিয়ে রাখা সেই পুণঃপ্রবেশকারী-ই হবে এই পৃথিবীতে খ্রীষ্টের রাজত্ব প্রতিষ্ঠাকারী ভিত্তি! সেটাই হল পুণঃ প্রবেশ কারীর তত্ত্ব!

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)

১. প্রথম, ঈশার বই-এর প্রায় প্রত্যেক জায়গাতেই অবশিষ্টাংশদের আমরা দেখতে পাই।

ঈশার এগারো অধ্যায়ে আমরা পড়ি,

“আর সেই দিন এই ঘটিবে, প্রভু আপন প্রজাদের অবশিষ্টাংশকে মুক্ত করিয়া আনিবার জন্য দ্বিতীয়বার হস্তক্ষেপ করিবেন” (ঈশা ১১:১১)

সেই অধ্যায়ে আরো একটি পদ বলে,

“তাঁহার প্রজাদের অবশিষ্টাংশ লোকেদের নিমিত্ত এক রাজপথ হইবে” (ঈশা ১১:১৬)

আর, সাঁইত্রিশ অধ্যায়ে ইহা বলছে,

“অতএব যে অবশিষ্টাংশ এখনও আছে আপনি তাহার নিমিত্ত প্রার্থনা উৎসর্গ করুন” (ঈশা ৩৭:৪)

এর পরবর্ত্তী পদ গুলোতেও আওমারা সেই অবশিষ্টাংশদের কথার উল্লেখ পাই,

“যে উত্তীর্ণগণ অবশিষ্ট আছে....। কেননা, জেরুজালেম হইতে অবশিষ্টাংশ গণ ..... সদাপ্রভুর উদ্যোগে ইহা সাধন করিবে’। (ঈশা ৩৭:৩১,৩২)

পরিশেষে আমরা ইহাকে ছেচল্লিশ অধ্যায়ে দেখতে পাই,

“হে জেকবের কুল,হে ইজ্রায়েল কুলের অবশিষ্টাংশ, আমার কথা শুন”
       (ঈশা ৪৬:৩১)

নতুন নিয়মের মধ্যে অবশিষ্টাংশদের বিষয়ে দেখা যায় রোমিয় বই-এতে যেখানে প্রেরিত পল বলেন,

“যিশাইয় ইজ্রায়েলের বিষয়ে এই কথা উচ্চৈস্বরে বলেন, ইজ্রায়েল সন্তাঙ্গণের সংখ্যা যদি সমুদ্রের বালুকার ন্যায়ও হয়, অবশিষ্টাংশই পরিত্রাণ পাইবে” (রোমানস ৯:২৭)

“আর যেমন যিশাইয় পূর্বে বলিয়াছিলেন, ‘বাহিনীগনের প্রভু যদি আমাদের জন্য একটি বীজ অবশিষ্ট না রাখিতেন, তবে আমরা সদোমের তুল্য হইতাম ও ঘমোরার তুল্য হইতাম” (রোমানস ৯:২৯)

ঈশা তার সংবাদকে আরম্ভ করেন লোকেদের পাপকে বর্ণনা করার দ্বারা।

“আহা পাপিষ্ঠ জাতি, অপরাধে ভারগ্রস্ত লোক, দুষ্কর্মকারীদের বংশ, নষ্টাচারী সন্তান গণ; তাহারা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করিয়াছে, ইজ্রায়েলের পবিত্রতাকে অবজ্ঞা করিয়াছে, বিপথে গিয়াছে, পরান্মুখ হইয়াছে” (ঈশা ১:৪)

এরপরে তাদের কুকার্যের জন্য পবিত্র ঈশ্বর যে দণ্ডাজ্ঞা প্রেরণ করবেন ভাববাদী তা বর্ণনা করেন,

“তোমাদের দেশ ধ্বংস স্থান, তোমাদের নগর সকল অগ্নিতে দগ্ধ; তোমাদের ভুমি বিদেশী লোকেরা তোমাদের সাক্ষাতে তাহা ভোগ করিতেছে, তাহা বিদেশীগন কর্তৃক বিনষ্ট ভুমির ন্যায় ধ্বংসস্থান হইয়াছে”। (ঈশা ১:৭)

পরিশেষে ঈশা বলেন, যে ঈশ্বর যদি মধ্যস্থতা না করতেন, থলে তারা সম্পূর্ন ভাবেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতেন;

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)

আর সেটাই হল ঈশার ভাববাদীর বই-এতে অবশিষ্টাংশদের তত্ত্ব।

২. দ্বিতীয়, অবশিষ্টাংশের যে তত্ত্ব তা আমরা বাইবেলের সব জায়গাতেই পাই।

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)

মহা প্লাবনের আগেও আমরা অবশিষ্টাংশদের তত্ত্ব দেখতে পাই যখন,

“আর সদা প্রভু কহিলেন, আমি যে মনুষ্য সৃষ্টি করিয়াছি তাহাকে ভূমন্ডল হইতে উচ্ছিন্ন করিব” (আদি পুস্তক ৬:৭)

তা ছিল বিচারের জন্য ভীতি প্রদর্শন করা।

“কিন্তু নোয়াহ’কে সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইলেন”
      (আদিপুস্তক ৬:৮)

তা ছিল অবশিষ্টাংশদের তত্ত্ব। নোয়াহ ও তার পরিবার ছিলেন ‘অত্যন্ত ছোট এক অবশিষ্টাংশ যাদের ঈশ্বর প্লাবনের হাত থেকে সুরক্ষিত করে রেখেছিলেন।

এ্যাব্রাহামের জীবনেও আমরা অবশিষ্টাংশের তত্ত্ব দেখতে পাই। তাঁকে আহবান করা হয়েছিল কলদিস দেশের উর থেকে, আর তিনি এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের অবশিষ্টাংশ রুপে পরিগণিত হলেন। এরপরে, আরো এক ব্যাক্তিকে অবশিষ্ট বলে পাওয়া যায়! ইহাকে আমরা যাত্রা পুস্তকে দেখতে পাই, যেখানে ঈশ্বর মোজেসের হস্ত দ্বারা মিশরের বন্ধন দশা থেকে ঈশ্বর তাঁর অবশিষ্টাংশদের পরিচালিত করেন। ইহাকে আমরা গিডইয়ন ও তার ছোট্ট দলের মধ্যে দেখতে পাই যেখানে কেবল তিনশত যোদ্ধা নিয়ে তারা মিডিয়ানাইটস-এর পরাক্রমী শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হোন। ইয়াহাকে আমরা দায়ুদ ও তার সেই তাড়িত ছোট্ট দলের মধ্যে দেখতে পাই যেখানে তারা রাজা সাউলের বিরাট সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। ইহাকে আমরা স্যামুয়েল এবং সমস্ত ভাববাদীদের মধ্যে দেখতে পাই যারা প্রতিমা পূজক রাজা ও তার নিষ্ঠুর সৈন্যদের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। ইহাকে আমরা যীশু ও তাঁর সেই ছোট দল সেই শিষ্যদের মধ্য এ দেখি যারা সুসমাচারকে পরাক্রমী রোম সাম্রাজ্যে পৌঁছে দেন, আর পরিশেষে আমরা অবশিষ্টাংশদের তত্ত্বকে সেই মহা ক্লেষ ভোগের সময়ে দেখতে পাই। যেখানে বাইবেল বলছে শয়তানের অভিশাপ ইজ্রাইয়েলীদের বিরুদ্ধে এবং তার বংশের অবশিষ্টাংশদের মধ্যে দেখতে পাই; যাহারা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন ও যীশুর সাক্ষ্য ধারণ করে। (প্রকাশিত বাক্য ১২:১৭)। সেটাই হল অবশিষ্টাংশদের তত্ত্ব – ঈশ্বরের লোকেদের ছোট দল যদের পাপপূর্ণ অন্ধকার জগতের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে।

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)

৩. তৃতীয়, অবশিষ্টাংশদের তত্ত্ব আজও সত্য।

মহা প্লাবনের সময়ে সেখানে কতজন ছিলেন ? কেবল মাত্র নয় ব্যাক্তি। নোয়া-হ ও তার পরিবার। তারাই কেবলমাত্র অবশিষ্টাংশ লোক! যে সময়ে ঈশ্বর এ্যাব্রাহামকে আহবান করলেন, সেই সময়ে সেইখানে কেবল মাত্র এক জন ব্যাক্তিই ছিলেন। কেবলমাত্র উনিই ছিলেন অবশিষ্টাংশ। ইজ্রায়েলিদের স্বধর্ম বিসর্জনের সময় কালে সেখানে কেবল মাত্র ৭০০০ অবশিষ্টাংশ ছিলেন আর ঈশ্বর এলিজাকে বললেন, ‘বালের সম্মুখে যারা হাঁটু পাতে নাই, এমন সাত সহস্র লোককে আমি আপনার নিমিত্ত অবশিষ্ট রাখিয়াছি’ (রোমানস ১১ঃ৪)। সেতাই ছিল অবশিষ্টাংশ! আর প্রভু যীশু খ্রীষ্ট আমাদের বলেছেন যে কেবল মাত্র অল্পই পরিত্রাণ পাইবে। তিনি বলেন,

“সংকীর্ণ দ্বার দিয়া প্রবেশ কর; কেননা, সর্ব্বনাশ যাইবার পথ প্রশস্ত ও পথ পরিসর, এবং অনেকেই তাহা দিয়া প্রবেশ করে; কেননা, যাইবার দ্বার সংকীর্ন ও পথ দূর্গম এবং অল্প লোকই তাহা পায়” (ম্যাথুজ ৭:১৩,১৪)

‘কেবলমাত্র অল্পই সেখানে রয়েছে যারা ইহা পাইবে! তারাই হল অবশিষ্টাংশ’!

লস এঞ্জেলেসের লক্ষাধিক প্রবল পরাক্রমী দেব দেবী অপেক্ষা, তাঁরই দূরদর্শিতা আজকের সন্ধ্যাবেলায় তিনি আপনাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। আপনি কি ঈশ্বরের অবশিষ্টাংশের অল্প ব্যাক্তি হতে চান? সেই অল্প সংখ্যকদের মধ্যে আপনি কি সেই ব্যাক্তি হতে চান যে যীশুকে খুঁজে পেয়ে পরিত্রাণ লাভ করবে? যীশু বলেছেন, ‘আর অল্প লোকেই তাহা পায়’। (ম্যাথুজ ৭ঃ১৪)। এবং আর অন্য সকলে ‘অনন্ত দন্ডে প্রবেশ করিবে’। (ম্যাথুজ ২৫ঃ৪৬)। আপনি কি পরিত্রাণ লাভ করে আমাদের মন্ডলীতে আসবেন এবং ঈশ্বরের অবশিষ্টাংশের অঙ্গ হয়ে উঠবেন?

কোন একজন স্পারজিউনকে বলেছিলেন, ‘আপনি সেটাকেই বিশ্বাস করুন যা অন্য কেউ হয়তো বিশ্বাস করে না, যীশুকে গ্রহণ করুন, আর আপনি কি করেন সেটা বড় কথা নয়, আপনি পরিত্রাণ লাভ করবেন, আপনি কতোটা প্রচার করেন বা কতোটা আপনি কাজ করেন তাতে কিছু যায় আসে না। কি নৈরাশ্যময়ই না এই তত্ত্ব! স্পারজিউন বলেছিলেন, ‘শুধু সেইভাবে এ কথা বলবেন না। আমি জানি কোন একজন শুনবে, কেউ কেউ তাদের হৃদয়কে খুলে দেবে, কেউ কেউ অনুতপ্ত হবে এবং পরিত্রাণ লাভ করবে’। আর তারাই হবে সেই অবশিষ্টাংশ! অবশিষ্টাংশের যে তত্ত্ব সেই বিষয়ে ঈশ্বর তাঁর লোকেদের সেই স্বান্তনা দিয়েছেন। আমাদের এই জগতে অবিশ্বাস ও প্রত্যাখানের সম্মুখীন হতে হবে কিন্তু এর মধ্য থেকে কেউ কেউ উদ্ধার পাবে। কেউ কেউ তাদের পাপ প্রবণ স্বার্থপর জীবন থেকে বার হয়ে যীশুর কাছে আসবে। কেউ কেউ তাদের পাপ থেকে তাঁর বহুমূল্য রক্তের দ্বারা ধৌত ও পরিষ্কৃত হবে। কেউ কেউ উদ্ধার বা পরিত্রাণ লাভ করবে। আপনি কি তাদের মধ্য থেকে একজন হবেন যিনি এই জগতে ঈশ্বরের অবশিষ্টাংশের এক অংশ হয়ে উঠবেন? ইহা এক মহান বিষয়; এক অদ্ভুত বিষয় যিনি এই জগতের পাপময় বিষয়গুলোকে ত্যাগ করেন আর ছোট মেষের এক অংগ হয়ে ওঠেন—ঈশ্বরের অবশিষ্টাংশের অংগ হয়ে ওঠেন! ইহা অদ্ভুত; কেননা ঈশ্বরের রাজ্যে সেই ভাবেই সমস্ত কিছু হয়। যীশু বলেছেন,

“হে ক্ষুদ্র মেষ আপ্ল, ভয় করিও না, কেননা তোমাদিগকে সেই রাজ্য দিতে তোমাদের পিতার হিত সংকল্প হইয়াছে” (লিউক ১২:৩২)

আজকে আমি তোমাদের বলছি আজকের রাত্রে আমাদের কাছে কেবল মাত্র সাধারণ বিশ্বাসে যীশুর কাছে আসুন। সেই অবশিষ্টাংশের অঙ্গ হয়ে উঠুন, তাঁর ক্ষুদ্র মেষ পালের অঙ্গ হয়ে উঠুন! আজ রাত্রে যীশুর উপরে নির্ভর করুন! তাঁর রক্তে আপনি পাপ থেকে পরিষ্কার হয়ে উঠুন। আজকে রাত্রে, এখনই, তাঁর দ্বারা পরিত্রাণ লাভ করুন!

মিঃ গ্রিফিথ এসে পল রাডের-এর গানটি পুণরায় গাইবেন। ইহার শিরোনাম ‘কেবল মাত্র বিশ্বাস করুন’। আজ রাত্রে আমি আপনাকে সেটাই করার আহবান জানাই। কেবলমাত্র বিশ্বাস করুন, কেবল যীশুতে বিশ্বাস করুন! মিঃ গ্রিফিথ যখন সেই গানটি গান, তখন আমি আপনাকে আপনার আসন ত্যাগ করে এই ভবনের পিছনের ঘরটিতে যেতে অনুরোধ করছি। আপনি যদি এখনও পর্যন্ত উদ্ধার লাভ করেন নি, এখন পর্যন্ত আপনি যদি প্রকৃত খ্রিষ্টীয়ান হন নি, তাহলে কেবল আপনার আসন ত্যাগ করে এই গানের সময়েই সেই ঘরে চলে যান। ডাঃ কাগান আপনাকে সেই নীরবতার জায়গাটিতে নিয়ে যাবেন যেখানে আমরা আপনার সঙ্গে শাস্ত্রের কিছু অংশ আলোচনা করে আপনার জন্য প্রার্থনা করবো। মিঃ গ্রিফিথ যখন গান করেন আপনি তখন সেখানে চলে যান।

হে ক্ষুদ্র মেষ পাল, ভয় করিও না, ক্রুশ হইতে সিংহাসন
   মৃত্যু হইতে জীবনে তাঁর নিজের জন্যই তিনি সেখানে গেলেন;
এই পৃথিবীর সমস্ত শক্তি, উর্দ্ধের সমস্ত শক্তি
   যে মেষ পালদের তিনি প্রেম করেন তাদের জন্য তাঁকে দেওয়া হয়েছে
কেবল বিশ্বাস, কেবলই বিশ্বাস করুন; কেবল মাত্র বিশ্বাসে, সমস্ত কিছু সম্ভব
   কেবল বিশ্বাস, কেবলই বিশ্বাস করুন, কেবলমাত্র বিশ্বাসে সমস্ত কিছুই সম্ভব।

হে ক্ষুদ্র মেষ পাল, ভয় করিও না, তিনি এগিয়ে গিয়েছেন
   আপনার মেষ পালক যে পথ মনোনীত করেন সে পথেই আপনাকে যেতে হবে;
মারার’ জলকে তিনি আপনার জন্য সুমিষ্ট করিবেন
   গ্যেৎশিমানির সমস্ত তিক্ততাকে তিনি পান করিয়াছেন
কেবল বিশ্বাস, কেবলই বিশ্বাস করুন; কেবল মাত্র বিশ্বাসে, সমস্ত কিছু সম্ভব
   কেবল বিশ্বাস, কেবলই বিশ্বাস করুন, কেবলমাত্র বিশ্বাসে সমস্ত কিছুই সম্ভব।

আপনার পরিণাম যাই হোক না কেন হে ক্ষুদ্র মেষ পাল, ভয় করিও না ‘দরজা
   বন্ধ হলেও’ তিনি সমস্ত ঘরেই প্রবেশ করেন
তিনি কোন সময়ে চলে যান না, তিনি কোন সময়ে প্রত্যাখান করেন না
   তাঁর উপস্থিতিতে অন্ধকার ও ভোরের নেই কোন হিসাব
কেবল বিশ্বাস, কেবলই বিশ্বাস করুন; কেবল মাত্র বিশ্বাসে, সমস্ত কিছু সম্ভব
   কেবল বিশ্বাস, কেবলই বিশ্বাস করুন, কেবলমাত্র বিশ্বাসে সমস্ত কিছুই সম্ভব।
(“Only Believe” by Paul Rader, 1878-1938).

ডাঃ চেন, অনুগ্রহ করে এখানে এসে আমাদের প্রার্থনার জন্য এগিয়ে নিয়ে চলুন।

সংবাদের পরিসমাপ্তি
ডাঃ হাইমার্সের সংবাদ আপনি প্রতি সপ্তাহে ইন্টারনেটের মাধ্যমে
www.realconversion.com এই সাইটে পড়তে পারেন। ক্লিক করুন “সংবাদের হস্তলিপি”

অথবা আপনি ডাঃ হাইমার্সকে মেইল পাঠাতে পারেন rlhymersjr@sbcglobal.net
অথবা আপনি তাকে পত্র লিখতে পারেনঃ পোস্ট বক্স ১৫৩০৮, লস এঞ্জেলেস, সিএ ৯০০০১৫,
এই ঠিকানায় অথবা আপনি তাকে টেলিফোন করতে পারেন (৮১৮)৩৫২-০৪৫২


সংবাদের আগে শাস্ত্রের যে অংশ পাঠ করা হয়েছে, তা করেছেন মিঃ কিউ ডং লিঃ ঈশা ১:৪-৯
সংবাদের আগে একক সংগীত গেয়েছেন মিঃ বেঞ্জামিন কিন গেইড গ্রীফিথঃ
“Only Believe” (by Paul Rader, 1878-1938).


খসড়া চিত্র

অবশিষ্টাংশদের সেই তত্ত্ব

লেখকঃ ডাঃ আর.এল.হাইমার্স, জুনি.

by Dr. R. L. Hymers, Jr.

“বাহিনী গণের সদাপ্রভু যদি আমাদের জন্য যৎকিঞ্চিৎ অবশিষ্ট না রাখিতেন তবে আমরা সদোমের সদৃশ হইতাম, গোমোরার তুল্য হইতাম”। (ঈশা ১:৯)

১.  প্রথম, ঈশার বই-এর প্রায় প্রত্যেক জায়গাতেই অবশিষ্টাংশদের আমরা দেখতে পাই।
ঈশা ১১:১১, ১৬; ৩৭: ৪, ৩১,৩২; ৪৬:৩; রোমনস ৯:২৭, ২৯; ঈশা ১:৪,৭

২.  দ্বিতীয়, অবশিষ্টাংশের যে তত্ত্ব তা আমরা বাইবেলের সব জায়গাতেই পাই।
আদি পুস্তক ৬:৭,৮; প্রকাশিতবাক্য ১২:১৭

৩.  তৃতীয়, অবশিষ্টাংশদের তত্ত্ব আজও সত্য।
রোমানস ১১:৪; ম্যাথু ৭:১৩,১৪; ২৫:২৬; লিউক ১২:৩২