Print Sermon

এই ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য হল ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি এবং ধর্ম্মোপদেশের ভিডিওগুলি বিশ্বব্যাপী পালক ও মিশনারিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা, বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বে, যেখানে ধর্ম্মতত্ত্বমূলক সেমিনারী বা বাইবেল স্কুল থাকলেও খুব কম রয়েছে|

এই সমস্ত ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপি ও ভিডিওগুলি www.sermonsfortheworld.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এখন প্রতি বছর 221টি দেশের প্রায় 1,500,000 কম্প্যুটারে যায়| আরও শত শত লোক ইউটিউবের ভিডিওর মাধ্যমে এগুলি দেখেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তারা ইউটিউব ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং আমাদের ওয়েবসাইটে চলে আসেন| ইউটিউব আমাদের ওয়েবসাইটে লোক এনে দেয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি প্রতি মাসে 46টি ভাষায় প্রায় 120,000 কম্প্যুটারে প্রচারিত হয়| ধর্ম্মোপদেশের পান্ডুলিপিগুলি গ্রন্থসত্ত্ব দ্বারা সংরক্ষিত নয়, কাজেই প্রচারকগণ আমাদের অনুমতি ছাড়াই এইগুলি ব্যবহার করতে পারেন| মুসলিম এবং হিন্দু রাষ্ট্রসমেত, সমগ্র পৃথিবীতে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার এই মহান কাজে সাহায্য করার জন্য কিভাবে আপনি একটি মাসিক অনুদান প্রদান করতে পারেন তা জানতে অনুগ্রহ করে এখানে ক্লিক করুন|

যখনই আপনি ডঃ হেইমার্‌সকে লিখবেন সর্বদা তাকে জানাবেন যে আপনি কোন দেশে বাস করেন, অথবা তিনি আপনাকে উত্তর দিতে পারবেন না| ডঃ হেইমার্‌সের ই-মেল ঠিকানা হল rlhymersjr@sbcglobal.net |




মানুষের পতন

THE FALL OF MAN
(Bengali)

লেখক : ডঃ আর. এল. হেইমার্স, জুনিয়র
by Dr. R. L. Hymers, Jr.

2018 সালের, 28শে এপ্রিল, শনিবারের সন্ধ্যাবেলায় লস্ এঞ্জেল্সের
ব্যাপটিষ্ট ট্যাবারন্যাক্ল মন্ডলীতে প্রচারিত একটি ধর্ম্মোপদেশ
A sermon preached at the Baptist Tabernacle of Los Angeles
Saturday Evening, April 28, 2018


আদিপুস্তক বাইবেলের ‘‘বীজতলা|’’ আদিপুস্তকের সবথেকে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হল এই প্রকৃত ঘটনা যে এটা অনেক আধুনিক মিথ্যার উত্তর দেয়| সি. এস. ল্যুইস, তার জীবনের শেষপ্রান্তে, বলেছিলেন যে ডারউইনের বিবর্তনবাদ হল আধুনিক কালের ‘‘কেন্দ্রীয় মিথ্যা|’’

ডারউইনের বিবর্তনবাদের মিথ্যা আদিপুস্তক দুটি উপায়ে খন্ডন করেছিল| প্রথমত, আমাদের বারংবার বলা হয়েছিল যে প্রাণী এবং এমনকী উদ্ভিদও ঈশ্বরের কর্তৃক সরাসরিভাবে সৃষ্ট| দ্বিতীয়ত, আদিপুস্তক আমাদের বলছে যে ‘‘সমস্ত পশুকুল এবং বনরাজি’’ কেবলমাত্র ‘‘তাদের আকৃতিতে’’ পুনঃউৎপাদন করতে পারে| পশুকুল এবং বনরাজি শুধুমাত্র তাদের ‘‘আকৃতির’’ মধ্যে পুনঃউৎপাদন করতে পারে| এটা বিবর্তনবাদ তত্ত্ব খন্ডন করে, যা বলছে যে পুনরুৎপাদন একটি ‘‘প্রজাতি’’র মধ্যে ঘটতে পারে| বিবর্তনবাদের যুক্তিগুলির মধ্যে দুর্বলতমটি হল যে সেখানে এক ‘‘প্রজাতি’’ অন্যটিতে রূপান্তরিত হতে পারে, এক ‘‘প্রজাতি’’ অন্যটিতে বিবর্তিত হতে পারে| এটা প্রমাণিত হয়নি| এই অনুসারে, আদিপুস্তক দেখায় যে বিবর্তনবাদ তত্ত্বের মৌলিক ধারণাগুলির একটি হল সম্পূর্ণ মিথ্যাকথা! একটা কুকুর কখনও ঘোড়াতে রূপান্তরিত হতে পারে না| একটা ঈগল কখনও মুরগিতে রূপান্তরিত হতে পারে না| সেখানে এক ‘‘প্রজাতি’’ থেকে অন্যটিতে রূপান্তরের কোন ব্যাপার নেই| আদিপুস্তক দেখাচ্ছে যে বিবর্তনবাদের মৌলিক ধারণাগুলির মধ্যে একটি হল জঘন্য এক মিথ্যা!

দ্বিতীয়ত, মানবজাতি হল তার পরিবেশের ফসল এই মিথ্যাও আদিপুস্তকের দ্বারা খন্ডিত হয়েছে| আমাদের প্রথম পিতামাতা এক ত্রুটিহীন শুদ্ধ পরিবেশে বসবাস করতেন| তা সত্ত্বেও তারা পাপী হয়েছিলেন| আর তাদের প্রথম সন্তান ছিলেন এক ঘাতক!

তৃতীয়ত, মন্দের সমস্যা বোঝা কার্যত অসম্ভব এই ধারণাও আদিপুস্তকের দ্বারা খন্ডিত হয়েছে| এদনের উদ্যান বহু দিয়াবলীয় এবং শয়তানীয় কার্যকলাপের বাসস্থান ছিল| শয়তান সর্পের ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন যা হবাকে পাপে প্ররোচিত করে| ষষ্ঠ অধ্যায়ের ‘‘nephilim’’ (নেফিলিম) ছিল সাধারণ মহিলাদের সঙ্গে সহ-বসবাসকারী দিয়াবল-বিষ্ট লোকদের ফসল| এতদানুসারে মন্দের সেই ‘‘সমস্যা’’ হল আধুনিক মানুষের দ্বারা সাজানো একটি মিথ্যা, যারা শয়তান ও দিয়াবলের বাস্তবতা বিচারে ব্যর্থ হয়েছিলেন|

চতুর্থত, আধুনিক ভূ-বিদ্যার একরূপত্ত্ব মতবাদ আদিপুস্তকের দ্বারা মিথ্যা বলে দেখানো হয়েছে| একটা বিশ্বব্যাপী মহাপ্লাবনের প্রচুর প্রমাণ পৃথিবীতে পাওয়া যায়| একরূপত্ত্ব মতবাদে বিশ্বাসীরা বলেন, ‘‘সেই অবধি সমস্তই সৃষ্টির আরম্ভ অবধি যেমন, তেমনই রহিয়াছে’’ (II পিতর 3:4)| তারা নোহের সময়কার মহাপ্লাবন সম্বন্ধে ‘‘ইচ্ছাপূর্ব্বক অজ্ঞ|’’ কিভাবে গ্রান্ড ক্যানিয়নের মতন বৈশিষ্ট্যগুলি তৈরী হয়েছে, অথবা সামুদ্রিক প্রাণীর জীবাশ্ম পর্বত শিখরে প্রতীয়মান হয়েছে, সেই বিষয়ে আধুনিক ভূবিদ্যাতে কোন বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা নাই| এতদানুসারে আদিপুস্তক আধুনিক ভূবিদ্যার অন্তরালে থাকা মিথ্যা খন্ডন করছে|

পঞ্চমত, মানুষের নৈতিক বিচ্যুতি বিশ্বাসযোগ্যভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না এবং কার্যত সমস্ত তত্ত্ব একটা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে, কারণ আদিপুস্তক চিত্রানুগভাবে দেখায় যে কিভাবে মানুষ তার আসল ধার্ম্মিকতা থেকে, আধুনিক বিশ্বে আমাদের চারিপাশে দেখতে পাওয়া জঘণ্য বর্বরতার মধ্যে পতিত হয়েছে, ‘‘কারণ ঈশ্বরকে জ্ঞাত হইয়াও তাহারা তাঁহাকে ঈশ্বর বলিয়া তাঁহার গৌরব করে নাই, ধন্যবাদও করে না; কিন্তু আপনাদের তর্কবিতর্কে অসার হইয়া পড়িয়াছে, এবং তাহাদের অবোধ হৃদয় অন্ধকার হইয়া গিয়াছে’’ (রোমীয় 1:21)| এতদানুসারে, আদিপুস্তক প্রামাণিক গ্রন্থের দ্বারা আধুনিক মনস্তত্ত্বের বহুবিধ তত্ত্ব মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে|

আজ রাত্রে এইসব মিথ্যার উপরে আরও বিশদে আলোকপাত করব| অনুগ্রহ করে আদিপুস্তক 3:1-10 পদগুলি দেখুন|

“সদাপ্রভু ঈশ্বরের নির্ম্মিত ভূচর প্রাণীদের মধ্যে সর্প সর্ব্বাপেক্ষা খল ছিল| সে ঐ নারীকে কহিল, ঈশ্বর কি বাস্তবিক বলিয়াছেন, তোমরা এই উদ্যানের কোন বৃক্ষের ফল খাইও না? নারী সর্পকে কহিলেন, আমরা এই উদ্যানস্থ বৃক্ষ সকলের ফল খাইতে পারি; কেবল উদ্যানের মধ্যস্থানে যে বৃক্ষ আছে, তাহার ফলের বিষয় ঈশ্বর বলিয়াছেন, তোমরা তাহা ভোজন করিও না, স্পর্শও করিও না, করিলে মরিবে| তখন সর্প নারীকে কহিল, কোন ক্রমে মরিবে না; কেননা ঈশ্বর জানেন, যেদিন তোমরা তাহা খাইবে, সেইদিন তোমাদের চক্ষু খুলিয়া যাইবে, তাহাতে তোমরা ঈশ্বরের সদৃশ হইয়া সদসদ্-জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে| নারী যখন দেখিলেন, ঐ বৃক্ষ সুখাদ্যদায়ক ও চক্ষুর লোভজনক, আর ঐ বৃক্ষ জ্ঞানদায়ক বলিয়া বাঞ্ছনীয়, তখন তিনি তাহার ফল পাড়িয়া ভোজন করিলেন; পরে আপনার মত নিজ স্বামীকে দিলেন, আর তিনিও ভোজন করিলেন| তাহাতে তাঁহাদের উভয়ের চক্ষু খুলিয়া গেল, এবং তাঁহারা বুঝিতে পারিলেন যে তাঁহারা উলঙ্গ; আর ডুমুর বৃক্ষের পত্র সিঙ্গাইয়া ঘাগ্রা প্রস্তুত করিয়া লইলেন| পরে তাঁহারা সদাপ্রভু ঈশ্বরের রব শুনিতে পাইলেন, তিনি দিবাবসানে উদ্যানে গমনাগমন করিতেছিলেন; তাহাতে আদম ও তাঁহার স্ত্রী সদাপ্রভু ঈশ্বরের সম্মুখ হইতে উদ্যানস্থ বৃক্ষসমূহের মধ্যে লুকাইলেন| তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে ডাকিয়া কহিলেন, তুমি কোথায়? তিনি কহিলেন, আমি উদ্যানে তোমার রব শুনিয়া ভীত হইলাম, কারণ আমি উলঙ্গ, তাই আপনাকে লুকাইয়াছি” (আদিপুস্তক 3:1-10)|

আর্থার ডব্লিউ. পিঙ্ক ছিলেন একজন ব্রিটিশ ঈশ্বরতত্ত্ববিদ এবং বাইবেল বর্ণনাকারী| পিঙ্ক সঠিকভাবে বলেছিলেন যে আদিপুস্তকের তৃতীয় অধ্যায় হচ্ছে ঈশ্বরের সমস্ত বাক্যের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাংশের একটি| পিঙ্ক বলেছিলেন,

ইহা হইতেছে ‘‘বাইবেলের বীজতলা|’’ এইখানেই হইল ভিত্তি যাহার উপরে আমাদের বিশ্বাসের বহু অত্যাবশকীয় মতবাদ অবস্থান করিতেছে| এইস্থানে আমরা তাহাদের ঐশ্বরিক সত্যের বহু স্রোতের উৎসের পুনরায় অনুসন্ধান করিতেছি| এইস্থানেই সূত্রপাত হইতেছে সেই মহান নাটকের যাহা মানব ইতিহাসের মঞ্চে অভিনীত হইয়াছে...এইস্থানে আমরা [মনুষ্য] জাতির বর্তমান পতিত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থার ঐশ্বরিক ব্যাখ্যা দেখিতেছি| এইস্থানে আমরা আমাদের শত্রু, সেই দিয়াবলের চতুর পরিকল্পনা বিষয়ক শিক্ষা লইতেছি...এইস্থানে মানুষের নিজস্ব হস্তকৃত একটি পরিকল্পনার দ্বারা তাহার নিজের নৈতিক লজ্জা আড়াল করিতে মানব চরিত্রের সেই বিশ্বজনীন প্রবণতা আমরা চিহ্নিত করিতেছি (Arthur W. Pink, Gleanings in Genesis, Moody Press, 1981 edition, p. 33) |

অধ্যায় তিন আমাদের বলছে কিভাবে শয়তান এদনের উদ্যানে প্রবেশ করেছিল, তখনও-অবধি-অবিচারিত এক সর্পের মধ্যে বাস করেছিল এবং তার মুখের মাধ্যমে কথা বলেছিল| সেখানে আমরা দেখছি যে আদমকে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তার সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করে, ঈশ্বরের দেওয়া সেই বাক্যকে প্যাঁচালো ও বিকৃত করে, শয়তান সেই নারীকে বলছে, ‘‘তুমি কোনক্রমে মরিবে না’’ যদি তুমি সেই নিষিদ্ধ বৃক্ষের, সেই ‘‘সদসদ্-জ্ঞানদায়ক যে বৃক্ষ’’ তার একটি ফল ভোজন কর|

এটা স্মরণ করা উচিৎ যে এই সময়ের মধ্যেই শয়তান প্রতারণায় ওস্তাদ ছিলেন| প্রকাশিত বাক্যের বইতে বাইবেল বলছে,

‘‘আর তাহার লাঙ্গুল আকাশের তৃতীয়াংশ নক্ষত্র আকর্ষণ করিয়া পৃথিবীতে নিক্ষেপ করিল...’’ (প্রকাশিত বাক্য 12:4)|

মাত্র কয়েকটি পদের পরেই, ঐ পদের অর্থ প্রকাশিত বাক্য 12:9 পদে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে,

‘‘আর সেই মহানাগ নিক্ষিপ্ত হইল; এ সেই পুরাতন সর্প, যাহাকে দিয়াবল [অপবাদক] এবং শয়তান [বিপক্ষ] বলা যায়, সে সমস্ত নরলোকের ভ্রান্তি জন্মায়; সে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হইল, এবং তাহার দূতগণও তাহার সঙ্গে নিক্ষিপ্ত হইল’’ (প্রকাশিত বাক্য 12:9)|

ডঃ হেনরী এম. মরিস বলেছিলেন,

সেই মহানাগকে এইস্থানে এদনের সর্প হিসাবে (আদিপুস্তক 3:1)...এবং যিনি যীশুকে [প্রান্তরে] পরীক্ষা করিয়াছিলেন সেই দিয়াবল হিসাবে চিহ্নিত করা হইয়াছে (Henry M. Morris, Ph.D., The Defender’s Study Bible, World Publishing, 1995, p. 1448; note on Revelation 12:9) |

ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্যে, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের অন্বেষণ করার জন্যে শয়তানকে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল (যিশাইয় 14:12-15; যিহিষ্কেল 28:13-18)| শয়তানকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, যেখানে সে পরিণত হয়েছিল

‘‘...আকাশের কর্ত্তৃত্বাধিপতির অনুসারে, যে আত্মা এখন অবাধ্যতার সন্তানগণের মধ্যে কার্য্য করিতেছে’’ (ইফিষীয় 2:2)|

কিন্তু সেইসব স্বর্গদূতের কি হয়েছিল যারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করতে শয়তানকে অনুসরণ করেছিলেন? প্রকাশিত বাক্য 12:9 বলছে,

‘‘সে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হইল, এবং তাহার দূতগণও তাহার সঙ্গে নিক্ষিপ্ত হইল’’ (প্রকাশিত বাক্য 12:9)|

শয়তানের সঙ্গে কতজন স্বর্গদূত বিদ্রোহ করেছিলেন? তাদের মধ্যে কতজন পৃথিবীতে ‘‘তাহার সঙ্গে নিক্ষিপ্ত হইল?’’ প্রকাশিত বাক্য বলছে,

‘‘আর তাহার লাঙ্গুল আকাশের তৃতীয়াংশ নক্ষত্র আকর্ষণ করিয়া পৃথিবীতে নিক্ষেপ করিল’’ (প্রকাশিত বাক্য 12:4)|

ডঃ মরিস বলেছিলেন,

এই সমস্ত ‘স্বর্গের নক্ষত্র’দের প্রকাশিত বাক্য 12:9 পদে শয়তানের দূত হিসাবে সনাক্ত করা হয়েছে (Morris, ibid., p. 1447) |

এতদানুসারে, আমরা বিশ্বাস করি যে স্বর্গের দূতগণের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ তাদের নেতা শয়তানের সঙ্গে একসাথে বিদ্রোহ করেছিল এবং দিয়াবলে পরিণত হয়ে সকলেই একসঙ্গে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল, যীশু তাঁর জাগতিক সেবাকাজে প্রায়ই যাদের সম্মুখীন হতেন|

শয়তান এই সব স্বর্গদূতদের মিথ্যা কথা বলেছিলেন| সন্দেহাতীতভাবে তিনি সেই একই রকমের মিথ্যা বলেছিলেন যা তিনি এদন উদ্যানে আদম ও হবার সামনে উপস্থাপিত করেছিলেন, যখন বলেছিলেন, ‘‘তাহাতে তোমরা ঈশ্বরের সদৃশ হইবে’’ (আদিপুস্তক 3:5)| সন্দেহাতীতভাবে তা ছিল সেই মিথ্যা যা স্বর্গদূতদের ধ্বংস করেছিল, ‘‘আমার সহিত আইস, এবং তোমরা ঈশ্বরের সদৃশ হইবে|’’ তারা দিয়াবলের মিথ্যায় বিশ্বাস করেছিল, কিন্তু তারা ‘‘ঈশ্বরের সদৃশ’’ হননি| ওহ, না! তারা ভয়ঙ্কর অশুচি দিয়াবলে পরিণত হয়েছেন, জগতের মাঝে ক্রোধ, আসক্তি ও ক্ষিপ্ততা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন!

আর ঠিক যেমন ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করতে তাদের প্ররোচিত করে শয়তান স্বর্গদূতদের সঙ্গে মিথ্যাচরণ করেছিলেন, তেমনই তিনি আবারও করেছিলেন, যখন মানুষের কাছে মিথ্যা বলেছিলেন| যে ধারণা দিয়ে শয়তান স্বর্গদূতদের প্রলুব্ধ করেছিলেন, যা তাদের বিনষ্ট করেছিল, এদন উদ্যানে আদম ও হবাকে প্রলুব্ধ করতে শয়তান সেই একই ধারণার অনুরূপ এক ভ্রান্ত ধারণা ব্যবহার করেছিলেন| আদিপুস্তক 3:4-5 পদদুটি শুনুন,

“তখন সর্প নারীকে কহিল, কোন ক্রমে মরিবে না; কেননা ঈশ্বর জানেন, যেদিন তোমরা তাহা খাইবে, সেইদিন তোমাদের চক্ষু খুলিয়া যাইবে, তাহাতে তোমরা ঈশ্বরের সদৃশ হইয়া সদসদ্-জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে” (আদিপুস্তক 3:4-5)|

সেই মহান স্বর্গদূত পতনে, স্বর্গে তাদের মহিমান্বিত স্থান থেকে স্বর্গদূতদের এক তৃতীয়াংশকে নামিয়ে আনতে শয়তান নিশ্চয়ই একই ধরণের যুক্তি, একই ধরণের একটা মিথ্যা ব্যবহার করে থাকবেন|

আর, এখন তিনি আমাদের প্রথম পিতা-মাতা’র কাছে, সেই মিথ্যা এবং ঈশ্বরের বাক্যের সেই বিকৃতি নিয়ে এসেছেন| এবং স্বর্গদূতদের মতন, উদ্যানে আমাদের পিতামাতাও তার মিথ্যাকে বিশ্বাস করেছিলেন এবং সেইরকম দন্ড পেয়েছিলেন, যেমন দন্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন স্বর্গদূতেরা যারা ‘‘মিথ্যার পিতা’’কে বিশ্বাস করেছিলেন, যার জন্যে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট শয়তানকে তলব করেছিলেন যখন তিনি ফরীশীদের বলেছিলেন,

“তোমরা আপনাদের পিতা দিয়াবলের, এবং তোমাদের পিতার অভিলাষ সকল পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা; সে আদি হইতেই নরঘাতক, সত্যে থাকে নাই, কারণ তাহার মধ্যে সত্য নাই| সে যখন মিথ্যা বলে, তখন আপনা হইতেই বলে, কেননা সে মিথ্যাবাদী ও তাহার পিতা” (যোহন 8:44)|

ঐ পদে শয়তানের সম্বন্ধে যীশু আমাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেছেন: (1) ‘‘সে আদি হইতেই নরঘাতক’’ এবং (2) ‘‘সে মিথ্যাবাদী ও তাহার পিতা|’’

শয়তান স্বর্গদূতদের মিথ্যা বলেছিলেন যখন তিনি তাদেরকে প্ররোচিত করছিলেন তাকে অনুসরণ করতে| শয়তান আদম ও হবাকে মিথ্যা বলেছিলেন যখন তিনি উদ্যানের একটি গাছের ফল খেতে তাদের প্ররোচিত করেছিলেন যা নিষিদ্ধ ছিল|

শয়তান ছিল ‘‘আদি হইতেই নরঘাতক|’’ তার মিথ্যাভাষণের মাধ্যমে তিনি ‘‘হত্যা’’ করেছিলেন সেই স্বর্গদূতদের যারা তাকে অনুসরণ করেছিলেন, ‘‘তার স্বর্গদূত,’’ কেননা তারা স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন, যেখানে তারা ‘‘দিয়াবলের ও তাহার দূতগণের জন্য যে অনন্ত অগ্নি প্রস্তুত করা গিয়াছে’’ (মথি 25:41), নরকের সেই অগ্নিশিখায় নিশ্চিত দন্ডাদেশের জন্যে অপেক্ষারত ছিলেন| ‘‘সে আদি হইতেই নরঘাতক,’’ কেননা তিনি কেবল স্বর্গের দেবদূতদের এক তৃতীয়াংশকে ‘‘হত্যা’’ করেছিলেন তাই নয়, তিনি সমগ্র মানব জাতিকেও তার প্রতারণা ও মিথ্যার দ্বারা হত্যা করেছেন| যীশু বলেছিলেন,

“সে আদি হইতেই নরঘাতক, সত্যে থাকে নাই, কারণ তাহার মধ্যে সত্য নাই...” (যোহন 8:44)|

শয়তান স্বর্গদূতদের এক তৃতীয়াংশকে হত্যা করেছিলেন তাদের পতনের সময়| এবং শয়তান মানুষের পতনকে ধংসের দিকে ঠেলে দিতে সমগ্র মানব জাতিকে সেই বিশাল পাপের ফাঁদে আটকে ‘‘হত্যা’’ করেছিলেন, যে পাপ মানব জাতি জীবন্ত ঈশ্বরকে অস্বীকার করে এবং শয়তানকে অনুসরণ করে করেছিল, আমাদের প্রারম্ভিক পাঠ্যাংশ আদিপুস্তক 3:1-10 এর পদগুলিতে এইকথা নথিভূক্ত রয়েছে|

আদম যখন পাপ করেছিলেন তিনি কোন সাধারণ মানুষ ছিলেন না| তিনি ছিলেন সমগ্র মানব জাতির প্রকৃতিদত্ত প্রধান ব্যক্তি, এবং সেইসঙ্গে ছিলেন রাষ্ট্রেরও প্রধান| যেমন শয়তানের বিদ্রোহ স্বর্গে স্বর্গদূতদের এক তৃতীয়াংশের উপরে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করেছিল, তেমনই আদমের বিদ্রোহ ও পাপে পতন অন্যদের জন্যেও বিরাট ফলস্বরূপ হয়েছিল| সমগ্র মানবজাতি তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে আদমের পতনে পতিত হয়েছিল| শিশুদের জন্য একটা পুরানো পিউরিটান পাঠ্যবইতে সঠিকভাবে লেখা হয়েছে, ‘‘আদমের পতনে, আমরা সকলেই পাপ করিয়াছি|’’ শয়তানের মিথ্যাবচনে বিশ্বাস করে, এবং নিষিদ্ধ ফল খেয়ে, আদম মৃত্যু ডেকে এনেছিলেন তার সমস্ত বংশে - সমগ্র মানব জাতির মধ্যে| যেমন প্রেরিত পৌল বলেছিলেন,

“এক মনুষ্য [আদম] দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল...” (রোমীয় 5:12)|

মানব জাতির উপরে আদমের পাপের প্রভাব অপরিমেয়| সেই পতনের আগে, ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে সহভাগিতা ছিল| পতনের পরে সেই সহভাগিতা সমাপ্ত হয়েছিল| মানুষ ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন| পতনের পরে তারা ঈশ্বর থেকে নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করতেন|

পতনের আগে মানুষ ছিল নিরপরাধ ও পবিত্র| আদম ও হবার কোন পাপ স্বভাব ছিল না| পতনের পরে তারা হয়েছিলেন পাপে পূর্ণ এবং লজ্জিত| প্রেরিত পৌল বলেছেন,

“এক মনুষ্য দ্বারা পাপ...জগতে প্রবেশ করিল” (রোমীয় 5:12)|

ঐ পদটি বলেনি যে ‘‘পাপগুলি’’ জগতে প্রবেশ করেছিল| এটা বলছে ‘‘পাপ’’ একবচনাত্মক| খারাপ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনের দ্বারা আদম জগতে পাপ প্রবেশ করাননি| তার পাপের কাজ তার স্বভাবে একটা পরিবর্তন এনেছিল| তার নিজের হৃদয় নৈতিকভাবে কলুষিত হয়েছিল|

পতনের আগে মানুষ জীবনদায়ক বৃক্ষের ফল খেতে এবং চিরকাল বেঁচে থাকতে পারতেন (আদিপুস্তক 2:9; 3:22)| পতনের পরে দেহের মৃত্যু আদমের পাপের শাস্তির একটি অঙ্গে পরিণত হয়েছিল| রোমীয় 5:12 পদটি বলছে,

“এক মনুষ্য [আদম] দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল...” (রোমীয় 5:12)|

এটা আত্মিক এবং শারীরিক উভয় প্রকার মৃত্যুর উল্লেখ করছে| আদম পাপ করার পরে, ঈশ্বর বলেছিলেন,

“...কেননা তুমি ধূলি, এবং ধূলিতে প্রতিগমন করিবে” (আদিপুস্তক 3:19)|

কাজেই, আদমের পাপের ফল হল শারীরিক আর সেইসঙ্গে আত্মিক মৃত্যু|

আদমের পতনের ফল হিসাবে, মৃত্যু মানবজাতির মধ্যে সর্বজনীন হয়ে পড়ল| মানবজাতির রাষ্ট্রীয় প্রধান, আদমের থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাপ অর্জন করে, এখন সমস্ত মানুষ পাপপূর্ণ চরিত্র নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে| বাইবেল বলছে,

“এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল” (রোমীয় 5:12)|

বাইবেলের সর্বত্র পতিত মানুষের পাপ-স্বভাবের কথা বলা হয়েছে|

“পাপ না করে এমন কোন মনুষ্য নাই” (I রাজাবলী 8:46)|

“এমন ধার্ম্মিক লোক পৃথিবীতে নাই, যে সৎকর্ম্ম করে, পাপ করে না” (উপদেশক 7:20)|

“ধার্ম্মিক কেহই নাই, এক জনও নাই, বুঝে, এমন কেহই নাই, ঈশ্বরের অন্বেষণ করে, এমন কেহই নাই| সকলেই বিপথে গিয়াছে, তাহারা একসঙ্গে অকর্ম্মণ্য হইয়াছে; সৎকর্ম্ম করে এমন কেহই নাই, এক জনও নাই” (রোমীয় 3:10-12)|

“যেন প্রত্যেক মুখ বদ্ধ এবং সমস্ত জগৎ ঈশ্বরের বিচারের অধীন হয়” (রোমীয় 3:19)|

“আমরা যদি বলি যে, আমাদের পাপ নাই, তবে আপনারা আপনাদিগকে ভুলাই, এবং সত্য আমাদের অন্তরে নাই” (I যোহন 1:8)|

আদমের পাপ তার সমস্ত উত্তরপুরুষের প্রতি আরোপিত হয়েছিল, অর্থাৎ, সমগ্র মানব জাতির প্রতি| মানব জাতির আঙ্গিক একতার কারণে, ঈশ্বর অবিলম্বে তার সমস্ত বংশধরের উপরে আদমের পাপ আরোপ করেছিলেন| এই অনুসারে, যে স্বভাব এখন প্রত্যেক মানুষ ধারণ করছে সেই স্বভাব হল পতিত হওয়ার পরে আদমের প্রাপ্ত সেই একই কলুষিত স্বভাব| রোমীয় 5:12 পদ অনুসারে মৃত্যু (আত্মিক ও দৈহিক উভয়ই) সমস্ত মানুষের কাছে এসেছে, কারণ সকলেই তাদের প্রকৃতিদত্ত প্রধান, আদমে পাপ করেছেন|

এটাকেই আমরা মানবজাতির "সম্পূর্ণ নৈতিক বিচ্যুতি" বলে মনে করি| এর মানে হল যে স্বাভাবিক কলুষিত অবস্থায় থেকে মানুষের ঈশ্বরের জন্য প্রকৃত ভালবাসা থাকে না| এটা বোঝায় যে সে ঈশ্বর অপেক্ষা নিজেকে বেশী পছন্দ করে, সে তার সৃষ্টিকর্ত্তা অপেক্ষা নিজেকে বেশী ভালবাসে| এছাড়া সম্পূর্ণ নৈতিক বিচ্যুতির অর্থ হল যে ঈশ্বরের প্রতি প্রত্যেক মানুষের স্বাভাবিক অবস্থায় একটা বিরাগ থাকে, তাঁর প্রতি একটা বিকর্ষণ বা বিতৃষ্ণা, এবং সে তাঁর বিরুদ্ধে থাকে|

“কেননা মাংসের ভাব ঈশ্বরের প্রতি শত্রুতা” (রোমীয় 8:7)|

সেই ‘‘মাংসের ভাব’’ সম্পর্ক স্থাপন করে ‘‘একজন মানুষ সৃষ্ট নয়,’’ নতুন জন্ম প্রাপ্ত নয় এই ধারণার সঙ্গে (The Geneva Bible, 1599, note on Romans 8:7) |

কাজেই, আপনার উপরে আদিপুস্তকের তৃতীয় অধ্যায়ের, আদমের পতনের একটা প্রভাব আছে| আপনি মন্ডলীতে লালিত হন বা না হন, আপনি একটা স্বভাব পেয়েছেন যা ঈশ্বর বা খ্রীষ্টের প্রতি বিরাগযুক্ত, যা আপনার পূর্বপুরুষ আদমের থেকে আপনার কাছে প্রবাহিত হয়েছে| আপনি যাই ভাবুন, যাই শিখুন বা যাই করুন সেগুলি আপনার উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া আভ্যন্তরীন দুর্নীতির মুখ ঘুরিয়ে দিতে পারে না| সেইজন্যে, পরিত্রাণকে অবশ্যই একটা ‘‘বেমানান’’ উৎস থেকে, সম্পূর্ণভাবে আপনার নিজের বাইরে অবস্থানকারী একটা উৎস থেকে আসতে হবে| এবং স্বয়ং ঈশ্বর হলেন সেই উৎস| আপনার অন্তরের নৈতিক বিচ্যুতির সম্বন্ধে ঈশ্বরকে অবশ্যই আপনাকে জাগরিত করতে হবে| ঈশ্বর অবশ্যই আপনার পরিত্রাণের ভ্রান্ত ধারণকে বিবর্ণ করবেন, এবং আপনার অন্তরের নৈতিক বিচ্যুতির বিষয়ে আপনার প্রত্যয় উৎপন্ন করাবেন| শুচি হতে এবং আপনার মধ্যে নতুন জন্ম সৃষ্টি করা, এই উভয়ের জন্যে ঈশ্বর অবশ্যই খ্রীষ্টের প্রতি আপনাকে আকর্ষণ করাবেন| আদমের পাপের কারণে, সেই ‘‘সর্বশেষ আদম,’’ খ্রীষ্ট ব্যাতীত আর অন্য কেউই, আপনাকে রক্ষা করতে পারেন না| সেটা হল একমাত্র অনুগ্রহের দ্বারা পরিত্রাণ, একমাত্র খ্রীষ্টের মাধ্যমে| সেটাই আমরা বিশ্বাস ও প্রচার করি|

আদমের পতনের আগে, ঈশ্বরের সঙ্গে তার একটা কলঙ্কহীন সম্পর্ক ছিল| তিনি বন্ধু হিসাবে ঈশ্বরের সঙ্গে ভ্রমণ করতেন| কিন্তু তার পাপ করার পরে, আদম এবং তার স্ত্রী উদ্যানের বৃক্ষসকলের আড়ালে ঈশ্বরের থেকে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছিলেন|

আপনি হলেন আদমের একজন সন্তান| সেইজন্যে ঈশ্বর বিষয়ক আপনার সব চিন্তা ত্রুটিপূর্ণ! তাঁকে বিশ্বাস করার পরিবর্তে, আপনি তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন, এবং তাঁর থেকে লুকিয়ে থেকেছেন, ঠিক যেমন আপনার পূর্বপুরুষ আদম করেছিলেন| সেই কারণে আপনি যখন খ্রীষ্টে বিশ্বাস করার চেষ্টা করেন তখন একটার পর আর একটা ভুল করে ফেলেন| এবং সেই কারণে আপনার মন একটা নির্দ্দিষ্ট বৃত্তের মধ্যে ঘোরাফেরা করে - একই ভুলের বার বার, এবং বার বার, এবং বার বার, অন্তহীনভাবে পুনরাবৃত্তি করে চলে|

এক কলেজ ছাত্রের সাক্ষ্য

আমার একটার পর আর একটা ভ্রান্ত মন পরিবর্তন হয়েছিল| আমি ভেবেছিলাম যে মন পরিবর্তনে আমার একটা অনুভূতি পাওয়ার প্রয়োজন আছে। এই ভ্রান্ত মন পরিবর্তন আমার জন্য একটা ভয়ঙ্কর সময় ছিল|

যখন আমি পরামর্শ নিতে আসতাম, তখন আমি ভাবতাম যে আমি কিছু বলার চেষ্টা করব| ধর্ম্মোপদেশের প্রচারের যা বলা হত আমি সেইসব মনে করার চেষ্টা করতাম, যাতে আমি সেগুলির কিছু কিছু পুনরাবৃত্তি করতে পারি| কিন্ত আমার বাক্যগুলির কখনও কোন মানে থাকত না| আমি অন্য কারও মন পরিবর্তনের সাক্ষ্য নকল করার চেষ্টা করেছিলাম| কি পাগলামি!

আমি একাকী প্রার্থনা করা শুরু করেছিলাম এবং নিজের পাপের বিষয়ে ভেবেছিলাম| এরপরে সুসমাচার প্রচার আমার কাছে খুব স্বচ্ছ বলে মনে হয়েছিল| ঘৃণাযোগ্য এক পাপী হিসাবে আমি খ্রীষ্টের কাছে এসেছিলাম নিজের মধ্যে কোন আশা ছাড়া - কিন্তু আমার সব আশা ছিল যীশু খ্রীষ্টে| খ্রীষ্টের কাছে আসাই ছিল আমার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং তাঁর রক্তের দ্বারা আমার সমস্ত পাপ ধৌত হয়ে শুচি হয়েছিল| আমি তাঁর রক্তে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলাম|

এক কলেজ-বয়সী মহিলার সাক্ষ্য

শয়তান আমাকে বলতেই থাকত, ‘‘এইসব লোকেরা ভ্রান্ত| যে পথে আপনি রয়েছেন তা হল একটি ত্রুটিহীন পথ| যীশুর কোন প্রয়োজন আপনার কাছে নেই|’’ তারপরে আমি মন্ডলীতে এসেছিলাম এবং আমি জেনেছিলাম যে আমি ভুল| আমি কাঁদছিলাম এবং আমি থামতে পারছিলাম না| ডঃ কেগান আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘আপনি কি খ্রীষ্টের কাছে আসবেন?’’ আমি উত্তর করেছিলাম ‘‘হ্যাঁ, আমি তাঁর কাছে আসব| আমি তাঁর কাছে আসব|’’ সেই দিন আমি নিজেকে যীশুর উপরে নিক্ষেপ করেছিলাম| আমি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে যীশুর প্রতি সমর্পণ করেছিলাম| যীশু খ্রীষ্ট আমাকে আলিঙ্গন করেছিলেন এবং তাঁর রক্তে আমার সমস্ত পাপ ধৌত হয়েছিল|

এক যুবকের সাক্ষ্য

আমি আর সেই সত্যকে অবজ্ঞা করতে পারিনি যে আমার হৃদয় ছিল কুৎসিত, বিদ্রোহী, মন্দতায় পরিপূর্ণ, এবং ঈশ্বর বিরোধী| আমি একজন ভাল লোক এই চিন্তা করিয়ে আমার হৃদয় আমাকে আর প্রতারণা করতে পারেনি| আমি ভাল ছিলাম না এবং আমার মধ্যে কোন ধার্ম্মিকতা ছিল না| আমি জানতাম যে আমি যদি সেই মুহূর্তে মারা যাই তো আমি সরাসরি নরকে যাব| নরকে যাওয়াই আমার প্রাপ্য ছিল| আমি এক পাপী ছিলাম| আমি ভেবেছিলাম আমার সব পাপ আমি লোকদের থেকে লুকিয়ে রাখতে পারব| কিন্তু আমি সেই সমস্ত পাপ ঈশ্বর থেকে লুকাতে পারিনি| ঈশ্বর আমার সব পাপ দেখেছিলেন| আমি নিজেকে আদমের মতন বলে অনুভব করেছিলাম যিনি নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার পরে ঈশ্বরের থেকে নিজেকে লুকানোর চেষ্টায় রত ছিলেন| আমি সম্পূর্ণ আশাহীন অনুভব করছিলাম| আমার সব উত্তম দলিল আমার মত এক হতভাগ্য পাপীকে রক্ষা করতে পারেনি| খ্রীষ্ট একাই আমাকে রক্ষা করেছিলেন| তাঁর রক্ত আমাকে আবৃত করেছিল এবং আমার সব পাপ ধুয়ে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল| তাঁর রক্তে খ্রীষ্ট আমাকে বস্ত্র পরিধান করিয়েছেন| তিনি আমাকে তাঁর ধার্ম্মিকতার বস্ত্র পরিধান করিয়েছেন| তাঁর রক্ত আমার পাপপূর্ণ হৃদয় ধুয়ে দিয়েছে| আমার বিশ্বাস ও নিশ্চয়তা একমাত্র খ্রীষ্টে| আমি এক পাপী ছিলাম - কিন্তু যীশু আমাকে উদ্ধার করেছিলেন|

কলেজ-বয়সী এক যুবতী মেয়ের সাক্ষ্য

আমি মন্ডলীতে প্রবেশ করেছিলাম এবং আমার হৃদয় গুরুভার হয়েছিল| আমি অনুভব করেছিলাম আমি পাপী| আমি আর সেই সত্যকে অবজ্ঞা করতে পারিনি যে আমার হৃদয় ছিল কুৎসিত, বিদ্রোহী, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে মন্দতায় পরিপূর্ণ| তারপরে, যখন ধর্ম্মোপদেশ প্রায় সমাপ্তির কাছাকাছি হয়েছিল, প্রথমবারের জন্য আমি সুসমাচার শুনলাম| এর আগে আমার কাছে কখনও এর কোন অর্থ ছিল না| আমার পাপের দেনা শোধ করতে, আমার পরিবর্তে খ্রীষ্ট ক্রুশের উপরে মৃত্যুবরণ করেছিলেন| আমার জন্যই তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন! আমার জন্যে তাঁর রক্ত প্রবাহিত হয়েছিল! বেপরোয়াভাবে আমার যীশুর প্রয়োজন হয়েছিল| আমার দৃষ্টি আমার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল| প্রথমবারের মত আমি খ্রীষ্টের দিকে তাকিয়েছিলাম, এবং সেই মুহূর্তে খ্রীষ্ট আমাকে উদ্ধার করেছিলেন! এখন আমি বুঝেছি জন্ নিউটন কি বলতে চেয়েছিলেন এই গানটির দ্বারা, ‘‘আশ্চর্য্য দয়া! কি সুমধুর স্বর, উদ্ধারিল আমায়! ছিলাম হারানো অন্ধ পাপী একদা, আমি চোখ খুলে এখন দেখি তায়!’’ আমি একজন পাপী ছিলাম, এবং যীশু খ্রীষ্ট আমার পাপ থেকে আমাকে উদ্ধার করেছিলেন|

আমি যীশুকে দেখিনি বা অনুভব করিনি| আমার কোন ঐশ্বরিক ধর্ম্মীয় অভিজ্ঞতা নেই| আমি শুধুমাত্র সরলভাবে তাঁকে বিশ্বাস করেছিলাম| যে মুহূর্তে আমি যীশুকে বিশ্বাস করেছিলাম, তিনি তাঁর রক্ত দিয়ে আমার পাপ ধুয়ে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন|

ত্রাতার আহ্বান শুনিতে পাই, ত্রাতার আহ্বান শুনিতে পাই,
ত্রাতার আহ্বান শুনিতে পাই, যাব যেথা লয়ে যাবেন, তাঁরই সাথে সাথে সারা পথ!
(“Where He Leads Me” by Ernest W. Blandy, 1890) |

প্রভু আমি আসছি, এখন আসছি তোমার কাছে;
ধৌত কর, শুচি কর আমাকে কালভেরীতে প্রবাহিত রক্তে|
(“I Am Coming, Lord” by Lewis Hartsough, 1828-1919) |


যদি এই প্রচার আপনাকে আশীর্বাদ দান করেছে তাহলে ডঃ হাইমার্স আপনার কাছ থেকে কিছু শুনতে চান| যখন আপনি ডঃ হাইমার্সকে চিঠি লিখবেন তখন অবশ্যই তাকে জানাবেন যে কোন দেশ থেকে আপনি তাকে লিখছেন নয়ত তিনি আপনার ই-মেলের জবাব দিতে সক্ষম হবেন না| যদি এই প্রচার আপনাকে আশীর্বাদ দান করেছে তবে ডঃ হাইমার্সকে একট ই-মেল পাঠান এবং তাকে সেইকথা জানান, কিন্তু কোন দেশ থেকে আপনি লিখছেন চিঠিতে সেটা অবশ্যই অন্তর্ভূক্ত করবেন| ডঃ হাইমার্সের ই-মেল ঠিকানা হল rlhymersjr@sbcglobal.net (এখানে ক্লিক করুন) | আপনি যে কোন ভাষায় ডঃ হাইমার্সকে চিঠি লিখতে পারেন, কিন্তু যদি পারেন তো ইংরাজিতেই লিখুন| যদি আপনি ডঃ হাইমার্সকে ডাক-ব্যবস্থার মাধ্যমে চিঠি পাঠাতে চান, তবে তার ঠিকানা হল P.O. Box 15308, Los Angeles, CA 90015 | আপনি তাকে (818)352-0452 নম্বরে ফোন করতে পারেন|

(সংবাদের পরিসমাপ্তি)
ডঃ হাইমার্সের সংবাদ আপনি প্রতি সপ্তাহে ইন্টারনেটে www.sermonsfortheworld.com ওয়েবসাইটে গিয়ে পড়তে পারেন| ক্লিক করুন “প্রচার পান্ডুলিপি|”

আপনি ডাঃ হাইমার্সকে মেইল পাঠাতে পারেন rlhymersjr@sbcglobal.net - আপনি
তাকে পত্র লিখতে পারেন P.O. Box 15308, Los Angeles, C A 90015.এই ঠিকানায়
। আপনি তাকে টেলিফোন করতে পারেন (818) 352-0452.

এই সুসমাচারের ম্যানুস্ক্রিপ্ট এর ওপর ডাঃ হাইমসের কোন কপিরাইট নেই। আপনারা
ইহা ব্যাবহার করতে পারেন ডাঃ হাইমসের অনুমতি ছাড়াই। অবশ্য, ভিডিও মেসেজ
সবই কপিরাইটের সহিত আছে এবং কেবলমাত্র তার অনুমতি নিয়েই ব্যাবহার করা যাবে।

সংবাদের আগে একক সংগীত পরিবেশন করেছেন মিঃ বেঞ্জামিন কিনকেড গ্রিফিত:
“I Am Coming, Lord” (Lewis Hartsough, 1828-1919)|